
বাংলাদেশে জমি বা ফ্ল্যাট কেনা অনেকের জন্য জীবনের সবচেয়ে বড় আর্থিক সিদ্ধান্ত। একটি ভুল সিদ্ধান্ত আপনাকে আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই আগে থেকেই সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। নিচে উল্লেখ করা হলো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা বাড়ি বা জমি কেনার আগে অবশ্যই যাচাই করা উচিত।
১. জায়গার লোকেশন
প্রপার্টির অবস্থান নির্ধারণ করে এর বর্তমান ও ভবিষ্যতের মূল্য। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, বাজার এবং অফিস এলাকার নিকটবর্তী প্রপার্টি সবসময় চাহিদাসম্পন্ন হয়। এছাড়া যানজট, পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ সুবিধা এবং নিরাপত্তা বিষয়গুলোও মাথায় রাখা উচিত।
২. ডেভেলপার বা মালিকের তথ্য যাচাই
ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে ডেভেলপার কোম্পানির পূর্বের প্রকল্প এবং রেপুটেশন খুঁজে দেখা প্রয়োজন। তারা সময়মতো হস্তান্তর করে কি না, সেটাও যাচাই করা জরুরি। জমি কেনার ক্ষেত্রে মালিকের নাম, জমির ইতিহাস এবং কোন ঝামেলা আছে কি না তা আইনজীবীর মাধ্যমে যাচাই করা উচিত।
৩. বৈধ কাগজপত্র
জমির দলিল, খতিয়ান, পর্চা, মিউটেশন, ট্যাক্স রিসিপ্ট ইত্যাদি কাগজপত্র ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে রাজউক বা পৌরসভার অনুমোদিত নকশা আছে কি না তা নিশ্চিত হতে হবে।
৪. দাম যাচাই এবং তুলনা
একই লোকেশনে বিভিন্ন প্রপার্টির দাম তুলনা করে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা দরকার। বাজারদরের চেয়ে অনেক কম দাম হলে সেখানে ঝুঁকি থাকতে পারে। প্রয়োজনে রিয়েল এস্টেট এজেন্ট বা রেজিস্ট্রি অফিস থেকে তথ্য নিয়ে মূল্য যাচাই করা যেতে পারে।
৫. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
আপনি যে এলাকায় প্রপার্টি কিনতে যাচ্ছেন সেখানে ভবিষ্যতে কোনো সরকারি বা বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে কি না, তা জানা দরকার। এটি প্রপার্টির ভবিষ্যৎ মূল্য বাড়াতে সহায়ক হবে।
৬. ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও পরিবেশ
অঞ্চলের ড্রেনেজ ব্যবস্থা, রোড কন্ডিশন, পানি নিষ্কাশন, শব্দ ও বায়ু দূষণ, ইত্যাদি বিষয় ভালোভাবে পর্যালোচনা করা উচিত। ফ্ল্যাট হলে বিল্ডিংয়ের নির্মাণমান, ফ্লোর প্ল্যান, কার পার্কিং ব্যবস্থা ইত্যাদিও যাচাই করা জরুরি।
৭. রেজিস্ট্রেশন ও হস্তান্তর প্রক্রিয়া
জমি বা ফ্ল্যাট কেনার পর দ্রুত রেজিস্ট্রেশন করে ফেলা উচিত। অনেকেই হস্তান্তরের পর বছরের পর বছর দলিল রেজিস্ট্রি করেন না, যা ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা তৈরি করতে পারে।
উপসংহার
জমি বা ফ্ল্যাট কেনা একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ। তাই আবেগের বশে না গিয়ে, যথাযথ যাচাই-বাছাই এবং আইনগত পরামর্শ নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আপনি যদি একটি নির্ভরযোগ্য রিয়েল এস্টেট প্ল্যাটফর্ম খুঁজে থাকেন, তাহলে আপনার পছন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে অনেকটাই সহজ হবে।